যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা নিশ্চিতে নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। নতুন এ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গোল্ডেন ডোম’। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৫ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। আগামী তিন বছরের মধ্যে এটি চালু হতে পারে। চীন ও রাশিয়ার হুমকি প্রতিহত করার লক্ষ্যে এ উচ্চাভিলাষী কর্মসূচির নেতৃত্ব দিতে একজন ‘স্পেস ফোর্স’ জেনারেলকেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে এ প্রকল্প শুরু করার প্রথম আদেশ দেন। লক্ষ্য হলো, শত শত উপগ্রহ নিয়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা, যা ধেয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত, অনুসরণ ও সম্ভব হলে তা প্রতিহত করতে পারবে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার কয়েক বিলিয়ন ডলারের ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, এটি প্রায় তিন বছরের মধ্যে চালু হতে পারে।
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, ইউএস স্পেস ফোর্সের জেনারেল মাইকেল গেটলাইন এ উদ্যোগের প্রধান কর্মসূচি ব্যবস্থাপক হবেন। এ প্রচেষ্টাকে ট্রাম্পের সামরিক পরিকল্পনার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের সঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘একবার সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে গোল্ডেন ডোম বিশ্বের অন্য প্রান্ত থেকে বা মহাকাশ থেকে উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রও আটকাতে সক্ষম হবে। এটি হবে সর্বকালের সেরা ব্যবস্থা।’ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমরা এ অত্যাধুনিক ব্যবস্থার জন্য একটি নকশা অফিসিয়ালি বাছাই করেছি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনুমান করেছেন, এ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১৭৫ বিলিয়ন ডলার। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে আগামী বছরের জন্য ২৫ বিলিয়ন ডলার প্রতিরক্ষা তহবিল থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে। ট্রাম্প এ প্রকল্পকে ‘আমাদের দেশের সাফল্য ও অস্তিত্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাইরের দুনিয়া খারাপ।’ ট্রাম্প আরও জানান, কানাডাও ‘যোগাযোগ করেছে’ এবং ‘এর অংশ হতে চায়।’
কয়েক মাস ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে আসছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমের মতো একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে চান। গত মার্চে কংগ্রেসে দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাম্প মার্কিন পার্লামেন্টকে ‘আমাদের মাতৃভূমি রক্ষায় অত্যাধুনিক গোল্ডেন ডোম শিল্ডে অর্থায়নের’ আহ্বান জানান।
তবে বিশ্লেষকরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, ইসরায়েলের চেয়ে ৪০০ গুণেরও বেশি বড় একটি দেশের জন্য এত বড় আকারের প্রকল্প তৈরি করা সম্ভব কি না। এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের টম কারাকো বলেন, ‘নতুন তথ্য হলো, ১৭৫ বিলিয়ন ডলার; কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ খরচ কত বছরের মধ্যে হবে। সম্ভবত এটি ১০ বছরের একটি প্রকল্প।’
এ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, সিলিকন ভ্যালি ও মার্কিন সফটওয়্যার দক্ষতা ব্যবহার করে অগ্রগতি আনা (প্রতিরক্ষা খাতে) এবং এর পাশাপাশি বিদ্যমান ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো ব্যবহার করা সম্ভব।
মন্তব্য করুন