হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কবি, অনুবাদক ও আইনজীবী। তার জন্ম ১৮৩৮ সালের ১৭ এপ্রিল ভারতের হুগলিতে। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ব্যাচের গ্র্যাজুয়েটদের অন্যতম। গ্র্যাজুয়েট হওয়ার আগে মিলিটারি অডিটর-জেনারেল অফিসে কেরানি পদে চাকরির মধ্য দিয়ে হেমচন্দ্রের কর্মজীবন শুরু হয়। কর্মজীবনে আইনজীবী হিসেবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। হেমচন্দ্রের প্রধান পরিচয় একজন দেশপ্রেমিক কবি হিসেবে। ১৮৭২ সালের জুলাই মাসে এডুকেশন গেজেটে তার ‘ভারতসঙ্গীত’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ সরকার তার প্রতি রুষ্ট হয়, এমনকি পত্রিকার সম্পাদক ভূদেব মুখোপাধ্যায়কেও এজন্য জবাবদিহি করতে হয়। কবিতাটি দীর্ঘকাল বঙ্গের জাতীয় সংগীতের মর্যাদায় আসীন ছিল। ‘ভারতবিলাপ’, ‘কালচক্র’, ‘রিপন উৎসব’, ‘ভারতের নিদ্রাভঙ্গ’ প্রভৃতি রচনায়ও স্বদেশপ্রেমের কথা ব্যক্ত হয়েছে। হেমচন্দ্রের প্রথম কাব্যগ্রন্থ চিন্তাতরঙ্গিণী ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হয়। তার শ্রেষ্ঠ রচনা হচ্ছে বৃত্র-সংহার মহাকাব্য। মহাভারতের কাহিনি অবলম্বনে রচিত এ কাব্যে মূলত সমসাময়িক সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জয় ঘোষিত হয়েছে। হেমচন্দ্রের অপর বিশিষ্ট কাব্য বীরবাহু কাব্য দেশপ্রেম ও গোত্রপ্রীতির পরিচয় সংবলিত একখানা আখ্যানধর্মী রচনা। তিনি বেশ কিছু ইংরেজি গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ করেন। সেসবের মধ্যে শেকসপিয়রের টেম্পেস্ট ও রোমিও-জুলিয়েট উল্লেখযোগ্য। ১৯০৩ সালের ২৪ মে হেমচন্দ্র মারা যান।
মন্তব্য করুন