আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫, ০৫:১৩ এএম
আপডেট : ২১ মে ২০২৫, ০৭:১৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কাজে আসছে না কোটি টাকার ‘লাইটনিং এরেস্টার’

লাইটনিং এরেস্টার। ছবি : কালবেলা
লাইটনিং এরেস্টার। ছবি : কালবেলা

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের ডেমিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা তজম আলী মিয়ার পুত্র সাজু মিয়া (২০)। গত ১১ মে বিকেলে বাড়ির পাশে গোসল করার সময় বজ্রপাতে মারা যান তিনি।

তজম আলী মিয়া জানান, সাজু বাড়ির পেছনে গোসল সেরে আসার সময় বজ্রপাত শুরু হয়। তখন সে বজ্রপাতের কবলে পড়ে।

শুধু সাজু মিয়াই নন গত পাঁচ বছরে হাওরে ধানকাটা, বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করা, পুকুরে মাছ ধরাসহ বিভিন্ন কাজে থাকাকালীন বজ্রপাতে আজমিরীগঞ্জ উপজেলাসহ জেলায় বজ্রাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮১ জন। এদের মধ্যে ৫৫ জনই কৃষক আর সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষ।

এ অবস্থায় উপজেলার হাওর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ জীবিকার তাগিদে হাওর, নদী ও হাওরের বিভিন্নস্থানে যেতেই এখন ভয় পাচ্ছেন।

বজ্রপাত থেকে সুরক্ষায় ২০২১-২২ অর্থবছরে হবিগঞ্জ জেলাসহ সারা দেশের ১৫ জেলায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩৫টি ‘লাইটনিং এরেস্টার’ (বজ্র নিরোধক যন্ত্র) স্থাপন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়।

জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উক্ত প্রকল্পের আওতায় হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নে একটি করে মোট ছয়টি, জেলার বানিয়াচংয়ে সাতটি, নবীগঞ্জে ছয়টি, বাহুবলে দুটি, হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় তিনটি, লাখাইয়ে তিনটি, চুনারুঘাটে দুটি, শায়েস্তাগঞ্জে দুটি এবং মাধবপুরে দুটিসহ ৯ উপজেলায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হয় ৩৩টি বজ্রনিরোধক দণ্ড।

কিন্তু যেসব জায়গায় এই এরেস্টার বসানো হয়েছে, তা নিয়ে শুরু থেকেই ছিল নানা বিতর্ক। তবে অনেকেই তৎকালীন সময়ে ভয়ে মুখ খোলেননি।

আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, লাইটনিং এরেস্টারগুলো বজ্রনিরোধ করে কিনা সেটি তারা সঠিক জানেন না।

সরেজমিনে উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের পুকুর পাড়ে একটি, শিবপাশা ইউনিয়নের পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি, জলসুখা বাজারে একটি, কাকাইলছেও বাজারে একটি, সদর ইউনিয়নের পাঁচ ক্ষেরের পতিতে একটিসহ মোট ছয়টি লাইটনিং এরেস্টার বসানো রয়েছে। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, এগুলো আসলে কোনো কাজ করে কিনা সেটি আসলে কারোরই জানা নেই।

কাকাইলছেও ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান বলেন, বজ্রনিরোধের জন্য কয়েক বছর আগে বাজারের পাশে এটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু আদৌ এটি কোনো কাজ করে কিনা সেটি আসলে কেউই জানে না। মাস তিনেক আগে মালবাহী গাড়ির ধাক্কায় এটি ভেঙে যায়। এখন পর্যন্ত এটি ভাঙা অবস্থায় রয়েছে।

শিবপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দা কাওছার মিয়া জানান, গত মাসে হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই ধানকাটার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এগুলো যদি সঠিক জায়গায় বসানো হতো আর কাজ করত তবে এত প্রাণহানি ঘটত না।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুবোধ মণ্ডল বলেন, এগুলো আসলে সচল কিনা সেটি আমাদের জানা নেই। এগুলো টেকনিক্যাল বিষয়। এ বিষয়ে পরীক্ষা করা ছাড়া বলা সম্ভব না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবিড় রঞ্জন তালুকদার কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। খুব শিগগিরই হাওরে বজ্রপাত নিরোধ শেল্টার সেন্টার নির্মাণ করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় নেই ডাম্পিং স্টেশন

ঈদে হাট কাঁপাতে আসছে ‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’

ছুটির দিনে ঘুরতে গিয়ে খুন হলেন আব্দুল্লাহ

মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যুবকের মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

চরে হঠাৎ জোয়ারের পানি, মৃত অবস্থায় ৩৪ গরু উদ্ধার

মার্কিন মালিকানায় গেল দ্য টেলিগ্রাফ

দুপুরের মধ্যে ঢাকাসহ ১১ জেলায় ঝড়ের শঙ্কা

আজ কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া 

ঈদুল আজহা : ট্রেনের ৩ জুনের টিকিট বিক্রি আজ

গাজার উত্তরে এখনো খাবার যায়নি, আরও মৃত্যু ৭৬

১০

২৪ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১১

২৪ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১২

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণার ফাঁদ, অতঃপর

১৩

‘যারা আজ সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত, তারাই মাকে দূরে রাখতে চায়’

১৪

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতার পদত্যাগ

১৫

চবি তেপান্তর সাহিত্য সভার নেতৃত্বে আবদুল মোমেন-রিয়াদ উদ্দিন

১৬

বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়কদের দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৪

১৭

সৈকতে পড়ে আছে মৃত ডলফিন, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ

১৮

পতেঙ্গা সৈকতে গোলাগুলি, ঢাকাইয়া আকবরসহ গুলিবিদ্ধ ২

১৯

কারাবন্দি সোহাগের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

২০
X